বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৩

মুহাম্মাদ (স.) কে কুটক্তির সেকাল ও একাল।


মুহাম্মাদ (স.) কে কুটক্তির সেকাল ও একাল। কি অপুর্ব মিল!!!!!!!!

একটি  বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা

সেকাল-
স্বয়ং রসূলের (স.) যুগেও অনেক নরাধম নবীকে গালি দিত। তাঁর নামে কুৎসা  রটাতো। তাঁর পুত-পবিত্র মিশনকে ধ্বংস করার মানসে নানান অপকৌশল খাটাতো। যার বিবরণ কোরআন হাদিসে স্পষ্ট ভাবে বর্ণিত হয়েছে। সে সকল নর পিশাচদের সর্দার ছিল, অলিদ ইবনে মুগিরা। যে এই নরকীয় কাজে সর্ব নিকৃষ্ট স্তরে স্থান করে নিয়েছে। দয়ার নবী করুণার ছবি কোন বিষয়ে কাহারো প্রতিষোধ নিতেন না। সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রই তাঁর থেকে প্রকাশ পেত। তাইতো মাহন রব্বুল আলামীন তাঁর হাবীবের চরিত্রের সর্বোৎকৃষ্টতার নিশ্চয়তা দিতে গিয়ে সূরা কলামের ৪ নং আয়াতে বলেন: انك لعلي خلق عظيم অর্থ: “নিশ্চয় আপনি সর্বত্তোম চরিত্রে অধীকারী”
এবং রসূলের অমুল্য বানীতেও তাঁর মহান চরিত্রে প্রমান পাওয়া যায়। রসূল বলেন,
صل من قطعك واعف عمن ظلمك واحسن الي من اساء اليك
অর্থ: “তোমার সাথে যে আত্মীয়তা ছিন্ন করেছে তার সাথে তুমি আত্মীয়তা রক্ষা কর, যে তোমার প্রতি যুলুম করেছে তাকে তুমি ক্ষমা করে দাও এবং যে তোমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছে তার প্রতি তুমি দয়া কর”। (মুসনাদে আহমাদ,১৬৯৯৯)
উল্লেখিত আয়াত ও পবিত্র হাদিস দ্বারা এ কথা স্পষ্ট রুপে প্রমাণিত হয় যে, রসূলের চরিত্রে বিন্দু মাত্র কলঙ্কের ছাপও ছিলনা। তাই তিনি আল্লাহর ওয়াস্তে সকল নির্যাতন ও সকল কুটক্তি সহ্য করতেন। কিন্তু রসূলের সাচ্চা আশেকগণ তাঁদের প্রিয় মাশুক পেয়ারা নবীর অবমাননা সহ্য করতে না পেরে অনেক নাস্তিক মুরতাদকে নির্দিধায় খতম করতে কুন্ঠা বোধ করেন নি। আর নবীজীও জানার পরে তাদেরক ভর্ৎসনা করেননি। বরং তাদেরকে নিরাপরাধ সাব্যস্ত করেছেন। বোখারী-মুসলিম সহ হাদীসগ্রন্থ সমুহে এ সকল ঘটনা স্পষ্ট ভাবে বর্ণিত রয়েছে।
তবে নিকৃষ্ট, নরাধম, জারজ অলীদ ইবনে মুগীরা কর্তৃক রসূলকে কুটক্তি করা পেয়ারা রসূলকে দারুণ ভাবে পিড়া দিত। তাই আল্লাহ তা’আলা তাঁর বন্ধুকে শান্তনা দিতে গিয়ে সূরা আল-ক্বলামের এই আয়াতগুলো অবতীর্ণ করেন।
ইরশাদে বারী তা’আলা:-
 وَلَا تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَهِينٍ (10) هَمَّازٍ مَشَّاءٍ بِنَمِيمٍ (11) مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ (12) عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيمٍ (13)
অর্থ: “১০) যে অধীক সপথ করে, যে লাঞ্চিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। ১১) যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে বেড়ায়। 12 ) যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সে সীমা লঙ্ঘনকারী, সে পাপিষ্ঠ।১৩) কঠোর স্বভাবের, তদুপরি জারজ সন্তান” (বয়ানুল কোরআন)
সকল মুফাচ্ছিরগণ এ ব্যাপারে একমত যে, উপরোক্ত আয়াতগুলো এই হারমাজাদা অলীদের ব্যাপারে নাজিল হয়েছে।
এবার তাহলে দেখা যাক কুরআনের বর্ণনার সাথে অলীদের জন্ম ইতিহাসের কি মিল রয়েছে!

প্রশিদ্ধ মুফাচ্ছির আল্লামা সাবূনী সফওয়াতুত তাফাসীরে এই আয়াতের ব্যখ্যায় লিখেন-
روي أن الآية لما نزلت جاء الوليد الي أمه فقال لها: ان محمدا وصفني بتسع صفات، كلها ظاهرة في أعرفها، غير التاسع منها يريد أنه 'زنيم' فان لم تصدقيني ضربت عنقك بالسيف !فقالت له:_ ان اباك كان عنينا _ أي لا يستطيع معاشرة النساء _ فخفت علي المال فمكنت راعيا من نفسي فأنت ابن ذلك الراعي
অর্থ:- বর্ণিত আছে যে, যখন সূরা আল-কলামের উপরোক্ত আয়াতগুলো নাজিল হয়, তখন অলীদ তার মা’র কাছে এসে বলল, মুহাম্মাদ আমার (৯) নয়টি দোষ বর্ণনা করেছে তার আটটি ইতিমধ্যে আমি আমার মধ্যে লক্ষ করেছি। কিন্তু নবম নম্বরটি তথা “জারজ” হওয়ার বিষয়টি আমার কাছে অস্পষ্ট। সুতরাং তুমি যদি আমার কাছে আমার জন্মের ব্যাপরে সত্য কথা না বল, তবে আমি তরবারী দ্বারা তোমার গর্দান উড়িয়ে দিব। তখন অলীদের মা তাকে বলল, শোন! তোমার এই বাবা ছিল পুরুষত্বহীন (তথা যৌন মিলনে অক্ষম) সুতরাং আমি তার সম্পদ হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাকে এ বিষয়ে চাপাচাপি না করে বরং একজন রাখাল রেখে দিলাম। এবং পর্যায় ক্রমে তার সাথে যৌন মিলন করি। আর তুমি হলে সেই রাখালের ছেলে। (সফওয়াতুত তাফাসীর)
উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা এ কথা স্পষ্ঠ হয়ে গেল যে, কোন নিকৃষ্ট স্বভাবের অধীকারী ও জারজ সন্তান ছাড়া নবীকে নিয়ে কুটক্তি করতে পারেনা। এবার আসুন দেখি একালের  কি অবস্থা।

একাল-
কোরআন যদিও বিভিন্ন ঘটনা, বিভিন্ন অবস্থা এবং বিভিন্ন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে নাজিল হয়েছে, কিন্তু এর বিধান সর্বকালে সকলের উপর বর্তায়। তাই তো দেখা যায় যে, কোন বিশেষ ঘটনার আয়াত দ্বারা অনেক মাসআলা বের করা হয়। অনেক সমস্যার সমস্যা সমাধান দেওয়া হয়। সে হিসাবে আমরা একথা সহজেই বুঝে নিতে পারি যে, কেয়ামত অবধি যত নবী অবমাননাকারী আসবে তারা ঐ হারামী অলীদের বংশধর বা অনুসারী। তাই তো আমরা দেখতে পাই যে, বর্তমানের নবী অবমাননাকারীদের মাঝেও তাদের গুরু অলীদের গুণগুলো (?) পাওয়া যায়। তারাও অলীদের ন্যয় অধীক সপথ কারী, (তথা মিথ্যাকে এমন জোর গলায় বলে যেন তা সত্যি বলছে) লাঞ্চিত, পশ্চাতে নিন্দা কারী, একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে বেড়ায়। ভাল কাজে বাধা দেয়, সীমা লঙ্ঘনকারী, তারা পাপিষ্ঠ,কঠোর স্বভাবের, তদুপরি তারা জারজ সন্তান।
তবে এখানেও জারজ হওয়ার বিষটি অস্পষ্ট। তাই এর একটু বিশ্লেষণ করা দরকার। সেকালের অলীদের মায়ের রাখাল আর একালের এক ধরণের নাম ধারী অভিজাত ফ্যামিলি, বাস্তবে নষ্ট পরিবার। তাদের গাড়ির ড্রাইভার, দোকানের কর্মচারি, বাসার চাকর এবং সিকিউরিটি গার্ড এক রকম। এই সুশীল (?) সাহেবেরা সারাদিন অফিসে দূর্ণীতি আর রাতে নাইট ক্লাবে গিয়ে নারী-মদ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। ফলে নিজের স্ত্রীর চাহিদা মেটানোর সময় পায় না। তাই তাদের (স্ত্রীদের) নিজেদেরকেই ব্যবস্থা করে নিতে হয় তাদের মনোবঞ্চনা পূরণের মাধ্যম। ফলে ড্রাইভার, চাকর, কর্মচারী এবং গার্ডের সাথে গড়ে তোলে অবৈধ সম্পর্ক। (আমি বিশেষ শ্রেণীর কথা বলছি, ব্যপক ভাবে নেওয়া ঠিক হবেনা) অতঃপর যা হবার তা হয়। যদি এদের ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জন জন্ম নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হয়। তবে বাকি ৫০ জনের টা কোন না কোন ভাবে হয়ে যায়। অতঃপর এই ৫০ জনের মধ্যে আবার ২৫ জন অকাল গর্ভপাত ঘটায় বা নবজাতককে নর্দামাতে ফেলে দেয়। যা প্রায়ঃশই আমারা পত্রিকাতে দেখতে পাই। অপর ২৫ জনের টা নিজেদের সন্তান হিসাবেই ভুমিষ্ঠ হয়। যাদের জন্মের সত্য ইতিহাস অজানা থেকে যায়।
আর এরাই পরবর্তীতে নাস্তিক এবং নবী ও ইসলাম অবমাননাকারী হয়ে যায়।
আর এরাই পরবর্তীতে নাস্তিক এবং নবী ও ইসলাম অবমাননাকারী হয়ে যায়।
আর এরাই পরবর্তীতে নাস্তিক এবং নবী ও ইসলাম অবমাননাকারী হয়ে যায়।
যদি গভিরভাবে অনুসন্ধান চালানো হয় তাহলে বেরিয়ে আসবে এদের জন্ম রহস্য।
সুতরাং দেখুন কি অপুর্ব মিল, সেকালের সাথে একালের!!!!!!!!
পার্থক্য শুধু সেকালে এদের সংখ্যা ছিল খুব নগন্য আর একালে এসে তাদের সংখ্যা দাড়িয়েছে অনেক অনেক গুনে বেশি।
অপর একটি পার্থক্য হলো, সেকালে নবীর আশেকগণ এ সকল নবী অবমাননাকারীদের সাঙ্গলীলা করতো কিন্তু তাদের কোন বিচার হতোনা। বরং তাদেরকে সম্মানিত করা হতো। আর একালে এদের বিরুদ্ধে কিছু বললে জীবন নাশের হুমকীতে থাকতে হয়। গুটি কয়েক নাস্তিকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারনে জীবন দিতে হয় হাজার হাজার নবী প্রেমিককে। এটিই পার্থক্য আর কিছুনা.................
তাই আমরা আবার সেই সোনালী যুগ ফিরিয়ে আনতে চাই। নির্মূল করতে চাই এ সকল নর পিশাচ নাস্তিক মুরতাদদের। এমন একটি পরিবেশ দেখতে চাই যেখানে নাস্তিক হত্যার বিচার হবেনা। বরং হাত্যাকারীকে পুরষ্কৃত করা হবে। আল্লাহ সকল মুসলমানকে তাওফীক দান করুন। ফিরিয়ে দিন সেই সোনলী যুগ। আমীন।।   

মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

একই দিনে সারা বিশ্বে ঈদ উদযাপন সম্পর্কে


প্রশ্নঃ একটি মহল বিশ্বব্যাপী একদিনে ঈদ পালন ও একসঙ্গে রোযা রাখার দাবি তুলেছে দেশের কিছু কিছু গ্রামে এভাবে পালিতও হচ্ছেএ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?

উত্তরঃ দেখুন, সাহাবায়ে কেরামের যুগেও ইসলাম যখন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল তখনও ভিন্ন ভিন্ন এলাকা ভেদে ঈদ ও রোযার দিন ভিন্ন হয়েছে সিরিয়া ও মদীনায় একই দিনে ঈদ হয়নিহাদীসের কিতাবে
لكل أهل بلد رؤيتهم
নামে একটি অধ্যায় রয়েছেসুতরাং পুরো বিশ্বে একই দিনে রোযা ও ঈদ করার নামে দেশের কোনো কোনো গ্রামে অগ্রিম রোযা বা ঈদ করে ফেলা ঐক্যের নামে অনৈক্যেরই একটি নিদর্শনতবে এসব বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করা বা পরস্পর তিক্ততার সৃষ্টি করা কিছুতেই কাম্য নয়
মনে রাখতে হবে যে, মুসলমানদের মূল সৌন্দর্য এবং ঐক্যের ভিত্তি হচ্ছে শরীয়তের অনুসরণের মধ্যেপুরো পৃথিবীতে একই দিনে রোযা ও ঈদ করা জরুরি কোনো বিষয় নয়
যেমনিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ তাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামায বিভিন্ন সময়ে পড়ে থাকেযেমন আপনি যখন ফজর পড়ছেন জাপানে তা পড়া হয়ে গেছে আরো ৩ ঘণ্টা আগেআর সৌদী আরবে তা পড়া হবে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় পরেএতে তো কোনো অনৈক্য সৃষ্টি হয় না

(মাসিক আল কাউসার)

শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৩

মা আমার সবার প্রিয়

মন এখনো মা’কে খোঁজে...............

রাতের খানা উপস্থিত। কিন্তু খেতে একটুও ইচ্ছে করছেনা। শুয়ে শুয়ে একটি ইসলামিক ম্যাগাজিন পড়ছিলাম। কিন্তু উদাসীনতা কাটছেনা। তাই বের হলাম। মোড়ের দোকান হতে একটি পানীয় কিনে খেলাম। কিছুক্ষণ গল্প করলাম। আবার ফিরে এলাম এবং ছাদে গিয়ে আকাশ দেখলাম। তবুও মন ঠিক হচ্ছেনা। অতঃপর আবার শুয়ে শুয়ে ওই ম্যাগাজিনটির পাতা উল্টাচ্ছিলাম। হঠাৎ চোখের সামনে মা’কে নিয়ে লেখা একটি ক্ষুদে রচনা গোচর হল। পড়লাম। মায়ের অভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাতে। আর তখনই আমার অচেতন মনটি চিৎকার করে মা’কে ডাকা শুরু করল। খুঁজে ফিরল মা’কে সর্বত্র। এখানে ওখানে, এ ঘরে ও ঘরে। মা! ও মা! তুমি কোথায়......? মা’র সাড়া মিলছেনা কোথাও। অবাক হয়ে একাকীই বলছে প্রশ্নের ছলে, মা সাড়া দিচ্ছেনা কেন? সেই কখন থেকে ডাকছি। কোন কথাইতো বলছেনা!
এমন সময় কে যেন অদৃশ্য হতে বলছে, উনি তো ঘুমিয়ে আছেন। শান্তির ঘুম। চির শান্তির ঘুম। কেন তাকে ডাকছ? তাকে একটু ঘুমোতে দাও। সবে মাত্র শুয়েছেন, চোখটা হয়তো সবে মাত্র লেগে এসেছে। আরো দীর্ঘকাল ঘুমোতে হবে তাকে। তোমার সুখের আশায় দীর্ঘকাল নিদ্রা যাননি তিনি। বড় ক্লান্ত হয়ে এখন একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। তাকে বড্ড জ্বালাতন করেছ তুমি। আর কষ্ট দিওনা। এখন থেকে আর সাড়া দিবেন না তোমার ডাকে। তিনিতো মালিকের সান্যিধ্যে চলে গেছেন। এ ধরা হতে বিদায় নিয়ে। চির বিদায়। ওখানে গেলে আর ফিরে আসেনা মানুষ। সকল বায়না শোনেন কিন্তু কোনটাই পূরণ করেন না। সকল নালিশ শোনেন কিন্তু কিছু বলেন না। তোমার ফোন রিসিভ করবেন না আর। তোমার সহদোর ভাইও যদি তোমাকে দ্বিখন্ডিত করে তবুও তাকে নিষেধ করবেন না। তাকে আর বুঝাবেনা। কারন, ইহধামে বহুবার নিষেধ করেছেন কিন্তু সে কথা মানেনি। তাই এখন আর বলবেন না। হয়তো চেয়ে চেয়ে শুধু দেখবেন। করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকবেন। কিন্তু ডাক দিবেন না। তার দায়ীত্ব শেষ। তিনি অবসর।
এক সময় তিনি তোমার ডাকে সাড়া দিতেন। তোমার সামান্য ব্যাথায় ব্যাথিত হতেন। নিজে না খেয়ে তোমাকে খাওয়াতেন। তোমার বিপদের খবর শুনলে নির্ঘুম রাত কাটাতেন। তোমাকে কেহ কষ্ট দিলে তাকে শাশিয়ে দিতেন। সে ভয়ে আর কথা বলতে পারত না। আজ তোমাকে কেহ আক্রমন করলেও তিনি তোমার পাশে দাড়াবেন না। তিনি এখন তোমাদের নয়। তিনি এখন নিছক তার মালিকের। অন্য জগতের। কোন সম্পর্ক নেই এখন তোমাদের সাথে তার। তাই এখন তোমার শত্র“দের স্বাধীনতা। তারা এখন তোমার উপর একযোগে হানা দিবে। তোমাকে তছনছ করতে সকল অপকৌশল খাটাবে। এটাকে তোমার মেনে নিতে হবে। অথবা নিজেকেই কৌশল অবলম্বন করতে হবে। জানি মা’য়ের শুন্যতা পূর্ণ হবেনা। তবুও এ দায়ীত্ব এখন থেকে তোমার। তুমি অসহায়। অনন্যপায়। মা-বাবার স্থলাবিষিক্তরা ঘাতক হয়ে গেছে। তাহলে কি করবে বল? মা’য়ের মালিক যিনি তিনি তোমারও মালিক। তার সহয়তা কামান কর। তিনি তোমাকে সাহায্য করবেন। অবশ্যই করবেন। তিনিই সাহায্যকারী। প্রতি আঘাতে মা’য়ের মায়বী শান্তনার বাণীগুলো দ্বারা বেদনা উপশম করবে। আগে আল্লাহকে স্মরণ করবে। তাকেই একমাত্র অবিভাক বানাবে। কারণ, তিনিই উত্তম অবিভাবক। অতঃপর মার আদরগুলোকে স্মরণ করে মনকে সান্তনা দিবে। মা তোমার জন্য এই দিনে আম্রগুলো লুকিয়ে রেখে দিতেন। গাছের কাঠালগুলো পাহারা দিয়ে রাখতেন। কাহাকেও ছুঁতে দিতেন না। বলতেন আমার বাছা আসলে আসলে খাবে। তোমরা যাও। তারা চলে যেত। ফোন করলে মা বলতেন, আয় বাড়িতে এসে বেড়িয়ে যা। যদি শুনতেন বাছা আসছে, সারাক্ষণ পথ চেয়ে থাকতেন। কাহারো সাথে গল্প কালে বলতেন, আমার বাছা এমন আমার বাছা ওমন ইত্যাদি। তোমার দোষ তিনি একেবারেই শুনতে রাজি হতেন না।
নিন্দুকেরা তার চির নিদ্রার অপেক্ষায় ছিল। তাদের অপেক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে। এখন তারা তাদের মনবাঞ্চনা পূর্ণ করবে। তাই তুমি অশ্রু ঝরাও। বেশি করে ঝরাও। কারন, তিনিও তোমার কষ্টে বহু অশ্রু ঝরিয়েছেন। তোমার জীবনে তার সাথের স্মৃতিগুলো স্মরণ করতে থাক। তোমার মাথায় মায়ের হাত বুলানোর প্রশান্তিগুলো অনুভব করতে থাক। মায়ের অতীতের আদরগুলোই এখন তোমার হাতিয়ার। মা’র জন্য অবশ্যই দোয়া করবে.................

হঠাৎ একজন এসে পিছন থেকে ডাক দিল। বেরিয়ে এলাম ভাবনার জগত হতে। অজান্তে বয়ে যাওয়া অশ্র“র শ্রোতধারা থামিয়ে দিলাম....................


মিসবাহুদদ্দীন বিন আবু বকর সিদ্দিক
শাহাজীর কান্দী, মুসাপুর, মাগুরা সদর।

মঙ্গলবার, ১৮ জুন, ২০১৩

অসীয়াত নামা।

আরেফ বিল্লাহ হাকিম মুহাম্মাদ আখতার সাহেব (র.) এর 

অসীয়াত নামা।
-----------------

২০ রবিউর আউয়াল ১৪২০ মোতাবেক ৫ জুলাই ১৯৯৯ খিৃঃ
--------------------------------------------------------------

1 - আলহামদু লিল্লাহ অধম ঋণগ্রস্থ নয়।

2 - আমার ব্যহৃত সকল বস্তুর মালিক আমার ছেলে মাওঃ মাজহার সাল্লামাহুকে বানিয়ে দিলাম। আর আমি এসব ধার স্বরুপ ব্যবহার করছি। সুতরাং তাতে ত্যাজ্য সম্পদের বিধান বর্তাবেনা। আমার কক্ষের যাবতীয় জিনিসপত্রেরও মালিক তাকে বানিয়ে দিলাম। খানকা ২ খানকা ৩ এর সব কিছুর ব্যাপারেও একই কথা।

3 - আমার টাকার থলের উপর লেখা রয়েছে “হাদিয়ায়ে আহকার” তথা অধমের পক্ষ থেকে হাদিয়া স্বরুপ। সুতরাং তাতে ওয়ারাসাত জারি হবে। আমার ছেলের জন্য দুই ভাগ আর মেয়ের জন্য এক ভাগ। আর আমার জীবন সঙ্গিনীর নিকট আমার যে সম্পদ রয়েছে তাতেও ওয়ারাসাত জারি হবে। ফিদিয়া আদায়, রোজা পালন এবং নামাজ আদায় করার পর মীরাস তাক্বসীম হবে।

4 - আমি নিজেকে এবং আত্মীয় স্বজনদেরকে ও বন্ধুবর্গকে অসীয়ত করছি যে, জীবনের প্রতিটি মুহুর্তকে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টায় উৎসর্গ করবে। এবং এক মুহুর্তের জন্যও আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করবেনা। মনকে খুশি করার জন্য কখনো হারাম কাজে জড়াবে না। যদি কখনো পদস্খলন ঘটে যায় তাহলে সাথে সাথে তাওবা ইস্তেগফার এবং অনুশুচনার মাধ্যমে নিজের মাওলাকে রাজি খুশি করিয়ে নিবে।

5 - সারা জীবন সালেহীনদের সোহবতে থাকাকে অবশ্যক করে নিবে। সম্পর্ক কৃত স্বীয় মুরশিদের ছায়াকে নিজের মাথার উপর রাখবে।

6 - আমার সকল লিখনি প্রকাশে সর্বদাই গুরুত্ব দিবে। যেন সদকায়ে জারিয়া চালু থাকে। এবং আমাদের সন্তানাদি সারা জীবন দীনী খেদমতে নিয়জিত থাকে। লাইব্রেরীর ব্যবসাকে অগ্রধকিার দিবে এবং ঔষধলায়ের ব্যবসাকে দ্বীতিয় স্তরে রাখবে।

7 - সম্পদের লেনদেনের মাঝে তাকওয়ার অত্যাধিক গুরুত্ব দিবে। আর শরীয়াতের বিধানাবলীতে মুফতিগনের সমাধানকে মেনে নিয়ে অবশ্যই নিজের মত থেকে ফিরে আসবে।

8 - যে শহরেই আমার মৃত্যু হবে সেখানেই দাফন করবে।

9 - তিন বার সুরা ইখলাস এবং দোয়ায়ে মাগফেরাত পাঠ করতঃ আমার আত্মার জন্য প্রেরণ করার আমল করবে (ইসালে সাওয়াব করবে)

10 - আমার নামাজে জানাজা মাওঃ মাজহার সাল্লামাহু পাড়াবে।

11 - জানাজা দ্রুত দাফন করবে। সুন্নাতের অনুসরণ করতঃ সীনা কিবলামুখী করে দিবে এবং মুখ দেখানো ইত্যাদি প্রথা থেকে বেচ থাকবে।

অনুবাদকঃ আহাকার মিসাবহ

সোমবার, ১৭ জুন, ২০১৩

আল আসমাউল হুসনা


আল আসমাউল হুসনা বা আল্লাহ তায়ালার নিরানব্বই নামঃ

আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, আল্লাহ পাকের সর্বোত্তম নাম সমূহ আছে। অতএব তোমরা সেই নাম সমূহ নিয়ে তাকে ডাক। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালার নিরানব্বই নাম আছে। যে ব্যক্তি সর্বদা নিয়মিত এই সমস্ত নামের যিকির করে, আল্লাহ তায়ালা স্বীয় রহমতে ঐ ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করার আদেশ দিবেন। (বুখারী, মুসলিম)। অবশ্য এই নিরানব্বই নাম ছাড়া আল্লাহ তায়ালার আরও অনেক সিফাতি নাম আছে।
 . {هُوَ الله الَّذِىْ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ} মহান আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই,
. {الرَّحْمٰنُ} দয়ালু, . {الرَّحِيْمُ} অতি দানশীল, . {الْمَلِكُ} বাদশাহ্, . {القُدُّوْسُ} পাক-পবিত্র, . {السَّلَامُ} শান্তিদাতা, . {الْمُؤْمِنُ} নিরাপত্তাদানকারী, . {الْمُهَيْمِنُ} রক্ষাকারী, . {الْعَزِيْزُ} পরাক্রমশালী,১০. {الْجَبَّارُ} ক্ষমতাশালী, ১১. {الْمُتَكَبِّرُ} গৌরবান্বিত, ১২. {الْخَالِقُ} সৃষ্টিকর্তা, ১৩. { الْبَارِئُ } সৃষ্টিকারী, ১৪. {الْمُصَوِّرُ} আকৃতি দানকারী, ১৫. {الْغَفَّارُ} গুনাহ মাফকারী, ১৬. {الْقَهَّارُ} কঠোর সর্বশক্তিমান১৭. {الْوَهَّابُ} পুরষ্কারদাতা, ১৮. {الرَّزَّاقُ} আহারদাতা, ১৯. {الْفَتَّاحُ} প্রশস্তকারী, ২০. {الْعَلِيْمُ} মহাজ্ঞানী, ২১. {الْقَابِضُ} আয়ত্বকারী, ২২. {الْبَاسِطُ} প্রসারকারী, ২৩. {الْخَافِضُ} পতনকারী, ২৪. {الرَّافِعُ} উন্নতি প্রদানকারী, ২৫. {الْمُعِزُّ} সম্মানদাতা, ২৬. {الْمُذِلُّ} হীনকারী, ২৭. {السَّمِيْعُ} শ্রবণকারী, ২৮. {الْبَصِيْرُ} দর্শনকারী, ২৯. {الْحَكَمُ} আদেশ প্রদানকারী, ৩০. {الْعَدْلُ} ন্যায়বিচারক, ৩১. {اللَّطِيْفُ} সূক্ষদর্শী, ৩২. {الْخَبِيْرُ} সর্বজ্ঞানী, ৩৩. {الْحَلِيْمُ} ধৈর্য্যশীল, ৩৪. {الْعَظِيْمُ} মহান, ৩৫. {الْغَفُوْرُ} ক্ষমাশীল, ৩৬. {الشَّكُوْرُ} কৃতজ্ঞতা পছন্দকারী, ৩৭. {الْعَلِىُّ} উচ্চ ও উন্নত, ৩৮. {الْكَبِيْرُ} গৌরবান্বিত, ৩৯. {الْحَفِيْظُ} রক্ষাকর্তা, ৪০. {الْمُقِيْتُ} রক্ষণাবেক্ষনকারী, ৪১. {الْحَسِيْبُ} হিসাব পরিক্ষক, ৪২. {الْجَلِيْلُ} মহিমান্বিত, ৪৩. {الْكَرِيْمُ} অনুগ্রহ কারী, ৪৪. {الرَّقِيْبُ} প্রহরী, ৪৫. {الْمُجِيْبُ} দোয়া কবুলকারী, ৪৬. {الْوَاسِعُ} বিস্তারকারী, ৪৭. {الْحَكِيْمُ} হেকমত ওয়ালা, ৪৮. {الْوَدُوْدُ} শ্রেষ্ঠ বন্ধু, ৪৯. {الْمَجِيْدُ} বুযুর্গীওয়ালা, ৫০. {الْبَاعِثُ} পুনরুত্থানকারী, ৫১. {الشَّهِيْدُ} স্বাক্ষী, ৫২. {الْحَقُّ} সত্য, ৫৩. {الْوَكِيْلُ} কার্যকারক, ৫৪. {الْقَوِىُّ} শক্তিশালী, ৫৫. {الْمَتِيْنُ} অটল, ৫৬. {الْوَلِىُّ} বন্ধু (অভিভাবক), ৫৭. {الْحَمِيْدُ} প্রশংসিত, ৫৮. {الْمُحْصِىُ} সর্বজ্ঞানী, ৫৯. {الْمُبْدِئُ} প্রথম সৃষ্টিকারী, ৬০. {الْمُعِيْدُ} প্রত্যাবর্তনকারী, ৬১. {الْمُحْىِ} জীবনদাতা, ৬২. {الْمُمِيْتُ} মৃত্যুদাতা, ৬৩. {الْحَىُّ} চিরজীবি, ৬৪. {الْقَيُّوْمُ} চিরস্থায়ী, ৬৫. {الْوَاجِدُ} গভীর মুহব্বতকারী, ৬৬. {الْمَاجِدُ} গৌরবময়, ৬৭. {الْوَاحِدُ} এক, ৬৮. {الْاَحَدُ} একক, ৬৯. {الصَّمَدُ} অপ্রত্যাশী, ৭০. {الْقَادِرُ} শক্তিধর, ৭১. {الْمُقْتَدِرُ} ক্ষমতাশালী, ৭২. {الْمُقَدِّمُ} অগ্রসরকারী, ৭৩. {الْمُؤَخِّرُ} পশ্চাত বর্তীকারী, ৭৪. {الْاَوَّلُ} আদি, ৭৫. {الْاٰخِرُ} অনন্ত, ৭৬. {الظَّاهِرُ} প্রকাশ্য, ৭৭. {الْبَاطِنُ} অপ্রকাশ্য, ৭৮. {الْوَالِى} বন্ধু, ৭৯. {الْمُتَعَالِى} সর্বপ্রধান, ৮০. {الْبَرُّ} শান্তিদাতা, ৮১. {التَّوَّابُ } তওবা কবুলকারী, ৮২. {الْمُنْعِمُ } নিয়ামতদাতা, ৮৩. {الْمُنْتَقِمُ } প্রতিফলদাতা, ৮৪. {الْعَفُوُّ} ক্ষমাকারী, ৮৫. {الرَّؤُوْفُ} মেহেরবান বন্ধু, ৮৬. {مَالِكُ الْمُلْكِ} দুনিয়ার মালিক, ৮৭. {ذُو الْجَلَالِ وَالْاِكْرَامِ} সর্ব মহত্ব ও সম্মানের অধিকারী, ৮৮. {اَلرَّبُّ } প্রতিপালক, ৮৯. {لْمُقْسِطُ} ন্যায় পরায়ন, ৯০. {الْجَامِعُ} একত্রকারী, ৯১. {الْغَنِىُّ} সম্পদশালী, ৯২. {الْمُغْنِىُ} সম্পদদাতা, ৯৩. {الْمُعْطِيْ} নিবারক, ৯৪. {الضَّارُّ} বিপদদাতা, ৯৫. {النَّافِعُ} উপকারী, ৯৬. {النُّوْرُ} আলো, ৯৭. {الْهَادِىُ} পথ-প্রদর্শক, ৯৮. {الْبَدِيْعُ} প্রথম সৃষ্টিকারী, ৯৯. {الْبَاقِىُ} অনন্ত, ১০০. {الْوَارِثُ} স্বত্তাধীকারী, ১০১. {الرَّشِيْدُ} সৎ পথ প্রদর্শক, ১০২. {الصَّبُوْرُ } ধৈর্য্যশীল, ১০৩. {الحَنَّانُ} স্নেহশীল, ১০৪. {المَنَّانُ} পরম উপকারী, ১০৫. {المُغِيْثُ} বিপদে সাহায্যকারী, ১০৬. {القَرِيْبُ} অতি নিকটবর্তী, ১০৭. {المَوْلَي} সকলের প্রভূ, ১০৮. {النَصِيْرُ} সাহায্যকারী।