বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৩

মুহাম্মাদ (স.) কে কুটক্তির সেকাল ও একাল।


মুহাম্মাদ (স.) কে কুটক্তির সেকাল ও একাল। কি অপুর্ব মিল!!!!!!!!

একটি  বিশ্লেষণধর্মী আলোচনা

সেকাল-
স্বয়ং রসূলের (স.) যুগেও অনেক নরাধম নবীকে গালি দিত। তাঁর নামে কুৎসা  রটাতো। তাঁর পুত-পবিত্র মিশনকে ধ্বংস করার মানসে নানান অপকৌশল খাটাতো। যার বিবরণ কোরআন হাদিসে স্পষ্ট ভাবে বর্ণিত হয়েছে। সে সকল নর পিশাচদের সর্দার ছিল, অলিদ ইবনে মুগিরা। যে এই নরকীয় কাজে সর্ব নিকৃষ্ট স্তরে স্থান করে নিয়েছে। দয়ার নবী করুণার ছবি কোন বিষয়ে কাহারো প্রতিষোধ নিতেন না। সর্বোৎকৃষ্ট চরিত্রই তাঁর থেকে প্রকাশ পেত। তাইতো মাহন রব্বুল আলামীন তাঁর হাবীবের চরিত্রের সর্বোৎকৃষ্টতার নিশ্চয়তা দিতে গিয়ে সূরা কলামের ৪ নং আয়াতে বলেন: انك لعلي خلق عظيم অর্থ: “নিশ্চয় আপনি সর্বত্তোম চরিত্রে অধীকারী”
এবং রসূলের অমুল্য বানীতেও তাঁর মহান চরিত্রে প্রমান পাওয়া যায়। রসূল বলেন,
صل من قطعك واعف عمن ظلمك واحسن الي من اساء اليك
অর্থ: “তোমার সাথে যে আত্মীয়তা ছিন্ন করেছে তার সাথে তুমি আত্মীয়তা রক্ষা কর, যে তোমার প্রতি যুলুম করেছে তাকে তুমি ক্ষমা করে দাও এবং যে তোমার সাথে দুর্ব্যবহার করেছে তার প্রতি তুমি দয়া কর”। (মুসনাদে আহমাদ,১৬৯৯৯)
উল্লেখিত আয়াত ও পবিত্র হাদিস দ্বারা এ কথা স্পষ্ট রুপে প্রমাণিত হয় যে, রসূলের চরিত্রে বিন্দু মাত্র কলঙ্কের ছাপও ছিলনা। তাই তিনি আল্লাহর ওয়াস্তে সকল নির্যাতন ও সকল কুটক্তি সহ্য করতেন। কিন্তু রসূলের সাচ্চা আশেকগণ তাঁদের প্রিয় মাশুক পেয়ারা নবীর অবমাননা সহ্য করতে না পেরে অনেক নাস্তিক মুরতাদকে নির্দিধায় খতম করতে কুন্ঠা বোধ করেন নি। আর নবীজীও জানার পরে তাদেরক ভর্ৎসনা করেননি। বরং তাদেরকে নিরাপরাধ সাব্যস্ত করেছেন। বোখারী-মুসলিম সহ হাদীসগ্রন্থ সমুহে এ সকল ঘটনা স্পষ্ট ভাবে বর্ণিত রয়েছে।
তবে নিকৃষ্ট, নরাধম, জারজ অলীদ ইবনে মুগীরা কর্তৃক রসূলকে কুটক্তি করা পেয়ারা রসূলকে দারুণ ভাবে পিড়া দিত। তাই আল্লাহ তা’আলা তাঁর বন্ধুকে শান্তনা দিতে গিয়ে সূরা আল-ক্বলামের এই আয়াতগুলো অবতীর্ণ করেন।
ইরশাদে বারী তা’আলা:-
 وَلَا تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَهِينٍ (10) هَمَّازٍ مَشَّاءٍ بِنَمِيمٍ (11) مَنَّاعٍ لِلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ (12) عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيمٍ (13)
অর্থ: “১০) যে অধীক সপথ করে, যে লাঞ্চিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না। ১১) যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে বেড়ায়। 12 ) যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সে সীমা লঙ্ঘনকারী, সে পাপিষ্ঠ।১৩) কঠোর স্বভাবের, তদুপরি জারজ সন্তান” (বয়ানুল কোরআন)
সকল মুফাচ্ছিরগণ এ ব্যাপারে একমত যে, উপরোক্ত আয়াতগুলো এই হারমাজাদা অলীদের ব্যাপারে নাজিল হয়েছে।
এবার তাহলে দেখা যাক কুরআনের বর্ণনার সাথে অলীদের জন্ম ইতিহাসের কি মিল রয়েছে!

প্রশিদ্ধ মুফাচ্ছির আল্লামা সাবূনী সফওয়াতুত তাফাসীরে এই আয়াতের ব্যখ্যায় লিখেন-
روي أن الآية لما نزلت جاء الوليد الي أمه فقال لها: ان محمدا وصفني بتسع صفات، كلها ظاهرة في أعرفها، غير التاسع منها يريد أنه 'زنيم' فان لم تصدقيني ضربت عنقك بالسيف !فقالت له:_ ان اباك كان عنينا _ أي لا يستطيع معاشرة النساء _ فخفت علي المال فمكنت راعيا من نفسي فأنت ابن ذلك الراعي
অর্থ:- বর্ণিত আছে যে, যখন সূরা আল-কলামের উপরোক্ত আয়াতগুলো নাজিল হয়, তখন অলীদ তার মা’র কাছে এসে বলল, মুহাম্মাদ আমার (৯) নয়টি দোষ বর্ণনা করেছে তার আটটি ইতিমধ্যে আমি আমার মধ্যে লক্ষ করেছি। কিন্তু নবম নম্বরটি তথা “জারজ” হওয়ার বিষয়টি আমার কাছে অস্পষ্ট। সুতরাং তুমি যদি আমার কাছে আমার জন্মের ব্যাপরে সত্য কথা না বল, তবে আমি তরবারী দ্বারা তোমার গর্দান উড়িয়ে দিব। তখন অলীদের মা তাকে বলল, শোন! তোমার এই বাবা ছিল পুরুষত্বহীন (তথা যৌন মিলনে অক্ষম) সুতরাং আমি তার সম্পদ হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার ভয়ে তাকে এ বিষয়ে চাপাচাপি না করে বরং একজন রাখাল রেখে দিলাম। এবং পর্যায় ক্রমে তার সাথে যৌন মিলন করি। আর তুমি হলে সেই রাখালের ছেলে। (সফওয়াতুত তাফাসীর)
উপরোক্ত আলোচনার দ্বারা এ কথা স্পষ্ঠ হয়ে গেল যে, কোন নিকৃষ্ট স্বভাবের অধীকারী ও জারজ সন্তান ছাড়া নবীকে নিয়ে কুটক্তি করতে পারেনা। এবার আসুন দেখি একালের  কি অবস্থা।

একাল-
কোরআন যদিও বিভিন্ন ঘটনা, বিভিন্ন অবস্থা এবং বিভিন্ন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে নাজিল হয়েছে, কিন্তু এর বিধান সর্বকালে সকলের উপর বর্তায়। তাই তো দেখা যায় যে, কোন বিশেষ ঘটনার আয়াত দ্বারা অনেক মাসআলা বের করা হয়। অনেক সমস্যার সমস্যা সমাধান দেওয়া হয়। সে হিসাবে আমরা একথা সহজেই বুঝে নিতে পারি যে, কেয়ামত অবধি যত নবী অবমাননাকারী আসবে তারা ঐ হারামী অলীদের বংশধর বা অনুসারী। তাই তো আমরা দেখতে পাই যে, বর্তমানের নবী অবমাননাকারীদের মাঝেও তাদের গুরু অলীদের গুণগুলো (?) পাওয়া যায়। তারাও অলীদের ন্যয় অধীক সপথ কারী, (তথা মিথ্যাকে এমন জোর গলায় বলে যেন তা সত্যি বলছে) লাঞ্চিত, পশ্চাতে নিন্দা কারী, একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে বেড়ায়। ভাল কাজে বাধা দেয়, সীমা লঙ্ঘনকারী, তারা পাপিষ্ঠ,কঠোর স্বভাবের, তদুপরি তারা জারজ সন্তান।
তবে এখানেও জারজ হওয়ার বিষটি অস্পষ্ট। তাই এর একটু বিশ্লেষণ করা দরকার। সেকালের অলীদের মায়ের রাখাল আর একালের এক ধরণের নাম ধারী অভিজাত ফ্যামিলি, বাস্তবে নষ্ট পরিবার। তাদের গাড়ির ড্রাইভার, দোকানের কর্মচারি, বাসার চাকর এবং সিকিউরিটি গার্ড এক রকম। এই সুশীল (?) সাহেবেরা সারাদিন অফিসে দূর্ণীতি আর রাতে নাইট ক্লাবে গিয়ে নারী-মদ নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। ফলে নিজের স্ত্রীর চাহিদা মেটানোর সময় পায় না। তাই তাদের (স্ত্রীদের) নিজেদেরকেই ব্যবস্থা করে নিতে হয় তাদের মনোবঞ্চনা পূরণের মাধ্যম। ফলে ড্রাইভার, চাকর, কর্মচারী এবং গার্ডের সাথে গড়ে তোলে অবৈধ সম্পর্ক। (আমি বিশেষ শ্রেণীর কথা বলছি, ব্যপক ভাবে নেওয়া ঠিক হবেনা) অতঃপর যা হবার তা হয়। যদি এদের ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জন জন্ম নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হয়। তবে বাকি ৫০ জনের টা কোন না কোন ভাবে হয়ে যায়। অতঃপর এই ৫০ জনের মধ্যে আবার ২৫ জন অকাল গর্ভপাত ঘটায় বা নবজাতককে নর্দামাতে ফেলে দেয়। যা প্রায়ঃশই আমারা পত্রিকাতে দেখতে পাই। অপর ২৫ জনের টা নিজেদের সন্তান হিসাবেই ভুমিষ্ঠ হয়। যাদের জন্মের সত্য ইতিহাস অজানা থেকে যায়।
আর এরাই পরবর্তীতে নাস্তিক এবং নবী ও ইসলাম অবমাননাকারী হয়ে যায়।
আর এরাই পরবর্তীতে নাস্তিক এবং নবী ও ইসলাম অবমাননাকারী হয়ে যায়।
আর এরাই পরবর্তীতে নাস্তিক এবং নবী ও ইসলাম অবমাননাকারী হয়ে যায়।
যদি গভিরভাবে অনুসন্ধান চালানো হয় তাহলে বেরিয়ে আসবে এদের জন্ম রহস্য।
সুতরাং দেখুন কি অপুর্ব মিল, সেকালের সাথে একালের!!!!!!!!
পার্থক্য শুধু সেকালে এদের সংখ্যা ছিল খুব নগন্য আর একালে এসে তাদের সংখ্যা দাড়িয়েছে অনেক অনেক গুনে বেশি।
অপর একটি পার্থক্য হলো, সেকালে নবীর আশেকগণ এ সকল নবী অবমাননাকারীদের সাঙ্গলীলা করতো কিন্তু তাদের কোন বিচার হতোনা। বরং তাদেরকে সম্মানিত করা হতো। আর একালে এদের বিরুদ্ধে কিছু বললে জীবন নাশের হুমকীতে থাকতে হয়। গুটি কয়েক নাস্তিকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারনে জীবন দিতে হয় হাজার হাজার নবী প্রেমিককে। এটিই পার্থক্য আর কিছুনা.................
তাই আমরা আবার সেই সোনালী যুগ ফিরিয়ে আনতে চাই। নির্মূল করতে চাই এ সকল নর পিশাচ নাস্তিক মুরতাদদের। এমন একটি পরিবেশ দেখতে চাই যেখানে নাস্তিক হত্যার বিচার হবেনা। বরং হাত্যাকারীকে পুরষ্কৃত করা হবে। আল্লাহ সকল মুসলমানকে তাওফীক দান করুন। ফিরিয়ে দিন সেই সোনলী যুগ। আমীন।।